পূর্বাচলে কৃষির অত্যাধুনিক ল্যাব হচ্ছে : কৃষিমন্ত্রী

মত ও পথ প্রতিবেদক

পূর্বাচলে কৃষির অত্যাধুনিক ল্যাব হচ্ছে

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক কৃষিপণ্যের মান নিশ্চিত করতে ঢাকার পূর্বাচলে আধুনিক অ্যাক্রিডেটেড ল্যাব নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের মানসম্পন্ন ল্যাব না থাকার কারণে কৃষিপণ্য রপ্তানি সেভাবে করতে পারছি না। এজন্য এই ল্যাব করা হচ্ছে।

আজ শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) কাজী বদরুদ্দোজা মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় বারির ‘গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন কর্মশালা-২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। কর্মশালায় সারাদেশ থেকে কৃষি বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

universel cardiac hospital

মন্ত্রী বলেন, কৃষিপণ্য রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে আমরা কাজ করছি। পূর্বাচলে আমাদের দুই একর জায়গা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে কৃষিপণ্যের জন্য একটি অত্যাধুনিক অ্যাক্রিডেটেড ল্যাব সেন্ট্রাল থাকবে। কৃষিপণ্যের রপ্তানি করার জন্য প্রসেসিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে।

তিনি বলেন, বিদেশে রপ্তানির জন্য অ্যাক্রিডেটেড ল্যাব  প্রয়োজন। এটা নেই বলে ইন্দোনোশিয়ার মতো দেশ বাংলাদেশ থেকে আলু নেয় না।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টন আলু চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদন হয়। কিন্তু এই ল্যাব থেকে সার্টিফাইড না হওয়ার কারণে আমরা রপ্তানি করতে পারছি না।

এবার কৃষক ধানের দাম না পাওয়ায় চাষিদের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ রয়েছে মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, চাষিদের কাছে আমরা যেতে পারছি না। এখনো কোনো পথও পাচ্ছি না।

ধান বিক্রি করে কৃষক ন্যায্য দাম পাচ্ছে না-বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানিয়েছেন বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ কথা বলেছি। তিনি দুঃখ করে বলেন, এগুলো শুনতে আর ভালো লাগে না। আগে থাকতো খাবার নেই, খাবার নেই, মঙ্গা, তারপর দুর্ভিক্ষ, লঙ্গরখানা খোলো। এখন ধান উৎপাদন বেশি হয়েছে সেটাও এক টেনশন। এত টেনশন ভালো লাগে না।

আবদুর রাজ্জাক বলেন, এর সমাধান হলো আমাদের এখন অর্থকরী ফসল চাষে যেতে হবে। লাভজনক ফসলে যেতে হবে। বাংলাদেশের আবহাওয়া ভুট্টা উৎপাদনের খুবই উপযোগী। ভুট্টার সবকিছুই কাজে লাগে। অমেরিকায় সকালে নাস্তায় কর্ন হলো এক নম্বর খাবার। সালাতেও ভুট্টার ব্যবহার হয়।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষির যান্ত্রিকীকরণ ও বণিজ্যিকিকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করছি আমরা। এতে উৎপাদন ব্যয় হ্রাস ও ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে।

সাত থেকে আট লাখ টন ডাল আমদানি হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এর মূল্য আড়াই হাজার কোটি টাকার মতো। আগামী দুই থেকে তিন বছরে যেন আমরা ডালে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারি এর জন্য কৃষি বিজ্ঞানীসহ সবাইকে কাজ করতে হবে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ক্রম হ্রাসমান কৃষি জমি এবং ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর চাহিদা মেটাতে নতুন নতুন উন্নত ফসলের জাত ও প্রযুক্তিসমূহ কৃষকের মাঠে দ্রুত পৌঁছাতে হবে। সরকার এ ব্যাপারে সহায়তা করবে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বারি) বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন এর পরিচালক ( সেবা ও সরবরাহ) বাবু লাল নাগ। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ২১২টি ফসলের ৫৫৮টি উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে বারি।

কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আযাদের সভাপতিত্বে সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিরুজ্জামন, বিএআরআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও এমেরিটাস সায়েন্টিস্ট ড. কাজী এম বদরুদোদজা বক্তব্য দেন।

এর আগে মন্ত্রী বারি’র মৃত্তিকা বিজ্ঞান, কীটতত্ত্ব, উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব ল্যাব পরিদর্শন করেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে